এ কে আজাদ || সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি:
দৈনিক খবরের কন্ঠ পত্রিকা||
সিলেটের বিয়ানীবাজারে শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে ভারতীয় চিনি চোরাচালানের সাথে জড়িত আমিনুল ইসলাম বাদল ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় জাতীয় পত্রিকা দৈনিক কালবেলার উপজেলা প্রতিনিধি ও পূর্ব সিলেটের অনলাইন মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল দ্যা লোকাল টাইমস’র সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সাজুকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন।
গত ৮ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ‘রাজ্বস ফাঁকি দেয়া চিনি বাজারজাত, বিয়ানীবাজারের সিন্ডিকেটের ‘মানিকজোড়’ কারাগারে’ শিরোনামে সংক্রান্ত সংবাদ একটি অনলাইন মাধ্যম্যে প্রকাশিত ও প্রচারিত হলে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী কৃষক লীগের কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিয়ানীবাজারের লাউতা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের পরস্পর যোগসাজেশে ভারতীয় চিনি অবৈধভাবে শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এনে বাজারজাতকরণের অভিযোগে বিয়ানীবাজার থানায় দায়েরকৃত বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় (মামলা নং-৩, ১১/০১/২৪) গত ৭ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এরপর তাদের দুজনের গ্রেপ্তার, চোরাচালানের প্রক্রিয়া ও নানা অপকর্মের বিস্তারিত তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম সাজু।
সংবাদ প্রকাশের পর ১০ ও ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের কোড সম্বলিত নম্বর থেকে দুটি পৃথক কলে সাংবাদিক সাজুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. মুহিত হোসেন।
এছাড়া সুজন আবাদি (Sujon Abadi) নামে অন্য একটি অজ্ঞাত ফেসবুক আইডি থেকে বিভিন্ন পোস্টের নিচের সাংবাদিক সাজুর মুঠোফোন নম্বর বিলি করে দেখে নেয়ার বিষয়ে মন্তব্য করা হচ্ছে।
এদিকে, ফেসবুকে সাংবাদিক সাজুর মুঠোফোন নম্বর বিলিকারী সুজন আবাদির নাম ও ছবি পাওয়া গেলেও ঠিকানা জানা যায়নি। তবে অভিযুক্ত মো. মুহিত হোসেনের বাড়ি উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের বাহাদুরপুর ছফোনি গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তিনি স্থানীয় লাউতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম সাজু জানান, সংবাদ প্রকাশের পর ১০ ও ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে মুঠোফোনে কল তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেন ১১নং লাউতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. মুহিত হোসেন।
তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমিনুল ইসলাম বাদলকে নিউজ করার কারণে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম সাজুকে প্রাণে বাঁচতে দেয়া হবে না। তার হাত-পা কেটে হত্যা করা হবে।’
সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম সাজু আরও জানান, হুমকির প্রমাণ হিসেবে এবং হুমকিদাতার পরিচয় শনাক্তে তার কাছে একাধিক ডকুমেন্ট রয়েছে। তিনি জীবনের নিরাপত্তার জন্য বিয়ানীবাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশরাফ উজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী সাংবাদিকের অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম সাজুকে প্রাণনাশের হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিয়ানীবাজার প্রেস ক্লাব, বিয়ানীবাজার জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ও বিয়ানীবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির দায়িত্বশীলরা।
এ ঘটনায় কর্মরত সাংবাদিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে হুমকিদাতার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।