মোঃমাহাবুবুর রহমান।
ঝিনাইদহ(প্রতিনিধি)।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া বাজারে রাইস মিল কিনে বিপাকে পড়েছেন ওই মিলের এক শ্রমিক। তিনি রাইস মিলটির স্বত্বাধিকারীর নিকট থেকে যন্ত্রপাতি সহ সম্পূর্ণ মিলটি ৪ লাখ টাকা এবং বিদ্যুৎ বিলের জামানত ও বকেয়া বিল বাবদ ৭৭ হাজার ৪৮৮ টাকা পরিশোধ করে কিনে নেন। ক্রয় বিক্রয়ের বিষয়টি স্ট্যাম্পে লিপিবদ্ধ করে সাক্ষীগণের স্বাক্ষর গ্রহণপূর্বক আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট করা হয়। হঠাৎ করে গত রমজানে রাইস মিলের মূল স্বত্বাধিকারী স্বপরিবারে এলাকা থেকে হারিয়ে গেলে ক্রয়সূত্রে বর্তমান মালিক রাইস মিলটির মালিকানা বুঝে নিতে গেলে বাধে বিপত্তি। রাইস মিলের পাশের চা দোকানীও ঐ মিলের মালিকানা দাবি করেন। এমনকি তিনি রাইস মিলটি নিজের দখলে নিয়ে শুরু করেছেন ব্যবসা। এদিকে ক্রয়ের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও রাইস মিলটি মালিকানা পাচ্ছে না মিল শ্রমিক রফিকুল ।এ ঘটনায় কুলবাড়িয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পৃথক সালিশি বৈঠকেও কোন সমাধান আসেনি। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া গ্রামের কোরবান ইসলামে ছেলে রাইস মিল শ্রমিক রফিকুল ইসলামের সাথে। ২০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ কুলবাড়িয়া বাজারে অবস্থিত রাইস মিলটি তিনি ক্রয় করেন একই গ্রামের ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে সুকান্ত কুমার বিশ্বাসের নিকট থেকে। সম্প্রতি সুকান্ত সপরিবারে এলাকা থেকে নিরুদ্দেশ হওয়ায় একই গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে চা দোকানী রিন্টু মিয়াও ওই রাইস মিলের মালিকানা দাবি করছেন।ফলে একই প্রতিষ্ঠানের দুইজনের মালিকানা দাবি করাকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে জটিলতা। রাইস মিল শ্রমিক রফিকুল ইসলাম ন্যায় বিচার চেয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের নিকট ঘুরছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রাইস মিলটি আমি কিনেছি সুকান্তর নিকট থেকে। যার সাক্ষী ও বৈধ কাগজপত্র আমার নিকট রয়েছে। অথচ রিন্টু মিয়া সুকান্ত হারিয়ে যাওয়ার পরের দিন থেকে বলছেন তিনি নাকি সুকান্তর নিকট থেকে ৭ লাখ টাকা মূল্যে মিলটি কিনেছেন। এ সংক্রান্ত অসমজস্যপূর্ণ একটি বিক্রয় নামাও উপস্থাপন করেন।যা সালিশি বৈঠকে কারোর কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়নি। সুকান্ত হারিয়ে যাওয়াই রিন্টু মিয়া সুযোগ নিয়ে জোর করে দখল করে আমার কেনা মিলে ব্যবসা শুরু করেছে। আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার চাই। এ ব্যাপারে রিন্টু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সুকান্তর নিকট থেকে মিলটি আমি কিনেছি। আমার কাগজপত্র আছে। বাজার কমিটির লোক উপস্থিত থেকে মিলটি খুলে দিয়েছে।কুলবাড়িয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিয়ার হোসেন বলেন, রাইসমিল শ্রমিক রফিকুল ইসলাম অত্যন্ত ভালো ছেলে। মিল ক্রয় বিক্রয়ের বৈধ কাগজপত্র তার রয়েছে ঠিকই কিন্তু এ ব্যাপারটি সে আমাদেরকে জানায়নি। আর এখন মিল মালিক না থাকায় প্রতিষ্ঠানটির দাবিদার দুইজন। যে কারণে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা আলাপ-আলোচনা করেও এর সমাধান বের করতে পারেনি। কাগজপত্র দেখে আমার মনে হয় রফিকুল ইসলামই মিলটি পাবে। মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম বলেন,সমস্যাটি আমি জানতে পেরে গ্রামের লোকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলাম সুষ্ঠু সমাধানের জন্য। কিন্তু সেই কমিটি সমাধান করতে না পারার বিষয়টি লিখিতভাবে আমাকে জানিয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে মিলের মালিকানা পেতে আমি উভয়কেই আইনের দারস্ত হতে বলেছি।